(শ্রীমতী রাধার ১০৮ নাম – বাংলা অর্থসহ)
প্রারম্ভিক বাণী:
শ্রীমতী রাধারানী ভক্তগণের হৃদয়ে ভক্তি, প্রেম ও অনুগ্রহের অমৃতধারা প্রবাহিত করেন। তাঁর ১০৮টি নাম শ্রবণে ও স্মরণে অপরিসীম পূণ্য লাভ হয়।
শ্রীমতী রাধা হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণের সর্বোচ্চ প্রিয়া ও পরম ভক্ত। তিনি কৃষ্ণের আদিনী শক্তি – অর্থাৎ সেই শক্তি যার মাধ্যমে কৃষ্ণ নিজেই আনন্দ লাভ করেন। তাঁকে “ভক্তির দেবী” বলা হয় এবং তাঁর পূজার মাধ্যমে ভক্তেরা কৃষ্ণভক্তি অর্জনের আশীর্বাদ লাভ করে।
“ওঁ শ্রীরাধায়ৈ নমঃ”
(শ্রীমতী রাধার ১০৮ নাম)
শ্রীরাধা নমো নমঃ
শ্রী বৃষভানুজা নমো নমঃ
শ্রী কীর্তিদাকন্যাকা নমো নমঃ
শ্রী রাসেশ্বরী নমো নমঃ
শ্রী রাস-বাসিনী নমো নমঃ
শ্রী রশিক-ঈশ্বরী নমো নমঃ
শ্রী কৃষ্ণ প্রাণাধিক নমো নমঃ
শ্রী কৃষ্ণ প্রিয়া নমো নমঃ
শ্রী কৃষ্ণ স্বরূপিনী নমো নমঃ
শ্রী কৃষ্ণবামঙ্গসম্ভুতা নমো নমঃ।। ১০।।
শ্রী পরমানন্দরুপিনি নমো নমঃ
শ্রী কৃষ্ণা নমো নমঃ
শ্রী বৃন্দাবনী নমো নমঃ
শ্রী বৃন্দাবন বিনোদিনী নমো নমঃ
শ্রী কৃষ্ণ চন্দ্ৰ নমো নমঃ
শ্রী চন্দ্ৰকান্তা নমো নমঃ
শ্রী শতচন্দ্ৰনি ভনান নমো নমঃ
শ্রী গান্ধারবিকা নমো নমঃ
শ্রী গান্ধাব্ধারাধিকা নমো নমঃ
শ্রী মাধব সঙ্গিনী নমো নমঃ।। ২০।।
শ্রী দামোদরদ্বৈত সখি নমো নমঃ
শ্রী সূর্যপাসিকা নমো নমঃ
শ্রী আনন্দমঞ্জুরিজৈষ্ঠায় নমো নমঃ
শ্রী দামাবরজো নমো নমঃ
শ্রী উত্তমা নমো নমঃ
শ্রী বিশাখা সয়া নমো নমঃ
শ্রী বৃন্দাবনেশ্বরী নমো নমঃ
শ্রী জীবন স্বরূপা নমো নমঃ
শ্রী রাস বিলাসিনী নমো নমঃ
শ্রী নিত্য বিহারিনী নমো নমঃ।। ৩০।।
শ্রী নিত্য কেশরী নমো নমঃ
শ্রী শ্যামপ্ৰাণধণ নমো নমঃ
শ্রী প্রেমস্বরূপিনী নমো নমঃ
শ্রী নব কিশোরী নমো নমঃ
শ্রী রাসবিহারী নমো নমঃ
শ্রীগৌরাঙ্গী নমো নমঃ
শ্রী শ্যামা নমো নমঃ
শ্রী কুলবতী নমো নমঃ
শ্রী শ্রীজি নমো নমঃ
শ্রী মথেশ্বরী নমো নমঃ।। ৪০।।
শ্রী ক্রিয়েশ্বরী নমো নমঃ
শ্রী স্বধেশ্বরি নমো নমঃ
শ্রী ত্রিবেদভারতীশ্বরী নমো নমঃ
শ্রী সুরেশ্বরি নমো নমঃ
শ্রী ব্রজাধিপে নমো নমঃ
শ্রী ব্রজেশ্বরী নমো নমঃ
শ্রী আদ্যা শক্তি নমো নমঃ
শ্রী ক্ষমেশ্বরি নমো নমঃ
শ্রী কলাবতী নমো নমঃ
শ্রী কৃপাবতি নমো নমঃ।। ৫০।।
রাধা রানীর ১০৮ নাম বাংলা । 108 names Of Shri Radha In Bengali
শ্রী ইন্দুমুখি নমো নমঃ
শ্রী অনুপমা নমো নমঃ
শ্রী অবনী ধারণী নমো নমঃ
শ্রী ইষ্ঠভক্তি প্রদায়িনী নমো নমঃ
শ্রী অপদুন্ধারিণী নমো নমঃ
শ্রীকৃষ্ণ প্রাণেশ্বরী নমো নমঃ
শ্রী গোপেশ্বরী নমো নমঃ
শ্রী গোকুল ঈশ্বরী নমো নমঃ
শ্রী দয়াময়ী নমো নমঃ
শ্রী করুণাময়ী নমো নমঃ।। ৬০।।
শ্রী কুঞ্জনিবাসিনী নমো নমঃ
শ্রী নলিনাক্ষী নমো নমঃ
শ্রী কৃষ্ণভক্তি প্রদায়িনী নমো নমঃ
শ্রী কল্যাণী নমো নমঃ
শ্রী কৌমারী নমো নমঃ
শ্রী বল্লভী নমো নমঃ
শ্রী প্রধানা প্রকৃতি নমো নমঃ
শ্রী হরি প্রিয়া নমো নমঃ
শ্রী শ্রীশিবা নমো নমঃ
শ্রী বৈজয়ন্তী নমো নমঃ।। ৭০।।
শ্রী ধাত্রী নমো নমঃ
শ্রী মনোরোমা নমো নমঃ
শ্রী ক্ষমাবতী নমো নমঃ
শ্রী ত্রৈলোক্য মঙ্গলময় নমো নমঃ
শ্রী যোগেশ্বরী নমো নমঃ
শ্রী যোগগক্ষ্যা নমো নমঃ
শ্রী শান্তা নমো নমঃ
শ্রী সুগতি দায়িনী নমো নমঃ
শ্রী প্রেমাঙ্গী নমো নমঃ
শ্রী পূর্ণানন্দময়ী নমো নমঃ।। ৮০।।
শ্রী নরাঙ্গানা নমো নমঃ
শ্রী পরমার্থ প্রদায়িনী নমো নমঃ
শ্রী নিধুবন নিবাসিনী নমো নমঃ
শ্রী বংশীবট বিহারিনী নমো নমঃ
শ্রী নারী শিরোমনি নমো নমঃ
শ্রী রমা নমো নমঃ
শ্রী রত্মা নমো নমঃ
শ্রী পূর্ণা নমো নমঃ
শ্রী শ্যামমোহিনী নমো নমঃ
শ্রী হরিণ নয়না নমো নমঃ।। ৯০।।
শ্রী মদন মোহন মোহিনী নমো নমঃ
শ্রী সুধামুখী নমো নমঃ
শ্রী ভবসাগর তরণী নমো নমঃ
শ্রী সিন্ধু কন্যা নমো নমঃ
শ্রী কৃষ্ণাত্মা নমো নমঃ
শ্রী মহাভাব স্বরূপিনী নমো নমঃ
শ্রী সম্মোহিনী নমো নমঃ
শ্রী মহাভাব শিরোমনি নমো নমঃ
শ্রী বৃন্দাবন বিহারী নমো নমঃ
শ্রী বৃন্দাবন বিলাসিনী নমো নমঃ।। ১০০।।
এই ১০৮ নাম প্রতিদিন পাঠ করলে ভক্ত হৃদয়ে শ্রী রাধার চরণে অটুট প্রেম ও কৃপা লাভ হয়। শুদ্ধ ভক্তি ও প্রেমবোধ নিয়ে পাঠ করলে জীবনে আসে চির শান্তি ও ঈশ্বরপ্রেম।
📅 রাধাষ্টমী (Radhashtami):
ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে (ভাদ্রপদ মাসে), রাধারানীর আবির্ভাব তিথি পালিত হয়।
এই দিনটিতে রাধারানীর পূজা সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা সহকারে সম্পন্ন করা হয়।
এটি জন্মাষ্টমীর ঠিক ১৫ দিন পর পড়ে।
পঞ্চপত্র (পাঁচ ধরনের পাতা)
ফুল (বিশেষত জুঁই ও পদ্মফুল)
তুলসী পত্র (রাধার পছন্দ)
দুধ, দই, মধু, ঘি, চিনি – পঞ্চামৃত
চন্দন, হালদি, কুমকুম
ফলমূল ও মিষ্টান্ন
দীপ ও ধূপ
স্নান ও শুচি হয়ে পূজা শুরু করুন।
“ওঁ শ্রীরাধায়ৈ নমঃ” এই মন্ত্র জপ করুন।
মূর্তি বা ছবিতে পুষ্পাঞ্জলি, চন্দন, ধূপ এবং দীপ নিবেদন করুন।
পঞ্চামৃত দিয়ে রাধারানীর অভিষেক করা যেতে পারে।
ফল ও প্রসাদ নিবেদন করুন।
১০৮ নাম বা শ্রীমতী রাধার স্তব পাঠ করুন।
শেষে আরতি ও প্রার্থনা।
“রাধে জয় জয় মাধব-দৈতী”
অর্থ: হে রাধে! তুমি মাধবের (কৃষ্ণের) প্রিয়া – তোমায় প্রণাম।
অথবা,
“ওঁ শ্রীরাধায়ৈ নমঃ”
অর্থ: শ্রী রাধাকে নমস্কার জানাই।
রাধারানীর পূজার ফলে কৃষ্ণভক্তি সহজেই লাভ হয়।
সংসারিক বন্ধন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
হৃদয়ে শুদ্ধ প্রেম ও ভক্তি জন্মে।
জীবনে সুখ, শান্তি ও ঐশ্বর্য আসে।
(সহজ বাংলায় ধাপে ধাপে)
সকাল বা সন্ধ্যা – উভয় সময়েই পূজা করা যায়
রাধাষ্টমীর দিন হলে সবচেয়ে উত্তম
ঘরের পূজাস্থান বা পবিত্র একটি স্থান বেছে নিন
উপকরণ | ব্যবহার |
---|---|
শ্রী রাধার ছবি/মূর্তি | পূজার মূল উপাস্য |
ধূপ, দীপ, চন্দন, কুমকুম | পূজার জন্য |
ফুল (জুঁই, গোলাপ, পদ্ম ইত্যাদি) | পুষ্পাঞ্জলি |
তুলসী পত্র | প্রসাদ হিসেবে নিবেদন |
ফল ও মিষ্টি | ভোগ |
পঞ্চামৃত (দুধ, দই, মধু, ঘি, চিনি) | অভিষেকের জন্য |
পরিষ্কার কাপড় | প্রতিমা বা ছবির জন্য |
স্নান করে পরিষ্কার কাপড় পরিধান করুন
পূজার জায়গাটি পরিষ্কার করুন
চোখ বন্ধ করে শ্রী রাধার ভাব করুন
বলুন:
“ওঁ শ্রীরাধায়ৈ নমঃ”
“জয় শ্রী রাধে, শ্রীকৃষ্ণ প্রেমময়ী মাতা, আমাদের হৃদয়ে প্রেম জাগ্রত করুন।”
মূর্তিতে বা ছবিতে অল্প করে পঞ্চামৃত দিন
এরপর জল দিয়ে শুদ্ধ করুন ও পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে দিন
ধূপ ও প্রদীপ জ্বালান
ফুল ও তুলসীপত্র নিবেদন করুন
১০৮ নাম বা এই স্তোত্র পাঠ করুন:
“রাধে জয় জয় মাধব-দৈতী, গোকুল-তারুণী-মণ্ডল-মহ্যি…”
অথবা
“ওঁ শ্রীরাধায়ৈ নমঃ” ১০৮ বার জপ করতে পারেন
ফল, মিষ্টান্ন ও অন্যান্য খাবার নিবেদন করুন
বলুন:
“এই ভোগ আপনার, প্রভু – আপনি গ্রহণ করুন।”
প্রদীপ ঘুরিয়ে রাধারানীর আরতি করুন
আরতি গান গাইতে পারেন:
“জয় রাধে, জয় রাধে, রাধে জয় শ্যাম…”
“হে শ্রীমতী রাধারাণী! আপনি কৃষ্ণের প্রাণ, ভক্তের আশ্রয়। আমার হৃদয়ে ভক্তি জাগিয়ে তুলুন। আমি আপনার চরণে শরণাগত।”
সকাল বা সন্ধ্যায় ৫–১০ মিনিট সময় নিয়ে
এই মন্ত্র ১০৮ বার জপ করুন:
সূর্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে উঠে স্নান করুন
শুদ্ধ, পরিষ্কার বা নতুন বস্ত্র পরিধান করুন
মনকে পবিত্র ও একাগ্র করুন
একটি পরিষ্কার জায়গায় সাদা বা হলুদ কাপড় বিছিয়ে দিন
সেখানে রাধা ও কৃষ্ণের মূর্তি বা ছবি স্থাপন করুন
এক পাশে পূজার ঘট (পানিভর্তি পাত্র, উপর দিয়ে নারকেল বা আমপাতা) স্থাপন করুন
পঞ্চামৃত তৈরি করুন (দুধ, দই, মধু, ঘি, চিনি)
রাধা ও কৃষ্ণের মূর্তি বা ছবিতে অল্প করে অভিষেক করুন
এরপর জল দিয়ে শুদ্ধ করে একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে দিন
আরতির জন্য প্রদীপ প্রজ্বলিত করুন
রাধা-কৃষ্ণের নাম নিয়ে আরতি করুন
এরপর এই মন্ত্র জপ করুন:
চাইলে রাধা-কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে ভজন/কীর্তন গাইতে পারেন (উদাহরণ: “জয় রাধে জয় রাধে রাধে জয় শ্যাম…”)
রাধা-কৃষ্ণকে ফল, মিষ্টি, নারকেল, দই, মাখন ইত্যাদি নিবেদন করুন
ফুল ও তুলসী পাতা অর্পণ করুন
বলুন:
“হে রাধা-কৃষ্ণ! আপনি এই ভোগ গ্রহণ করুন ও আমাদের আশীর্বাদ করুন।“
রাধা ও কৃষ্ণের মূর্তির চারপাশে ৩ বা ৭ বার প্রদক্ষিণ করুন
তারপর দণ্ডবৎ বা পঞ্চাঙ্গ প্রণাম করুন
যারা পারবেন, তারা সারাদিন উপবাস পালন করতে পারেন
শুধু ফলমূল বা নিরামিষ আহার গ্রহণ করা যেতে পারে
সন্ধ্যায় পূজা শেষে প্রসাদ গ্রহণ করা উচিত
রাধার ১০৮ নাম পাঠ করুন বা শুনুন
শ্রী রাধা স্তব বা অষ্টকম পাঠ করুন
তীর্ণ রসপূর্ণ ভজনে দিন কাটান